বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
প্রশ্ন উঠায় রদবদল হচ্ছে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি। বাদ পড়ছেন ১১ নেতা। পাঁচ পদ হচ্ছে পুনর্বণ্টন। গত বৃহস্পতিবার বিকালে সিলেটের দু’নেতাকে নিয়ে ঢাকায় বৈঠকের পর সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পক্ষ থেকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ৬ই জানুয়ারি হবে পরবর্তী বৈঠক। ওই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অনুমোদনের জন্য দলীয় প্রধানের কাছে পাঠানো হবে। তবে- সিনিয়র সহ- সভাপতি হিসেবে কমিটিতে কে অন্তর্ভুক্ত হবেন সেটি চূড়ান্ত করবেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর নাম প্রস্তাব আকারে সভানেত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হলেই অতীতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিতো। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে- কমিটি চূড়ান্ত করার আগেই সব ক্ষোভ কমিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি কমিটি দিতে চান সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। এতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা) সাখাওয়াত হোসেন শফিক। ২০১৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর সিলেটে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছিলেন এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা নাসির উদ্দিন খান। করোনাকালীন সময়ের স্থবিরতার পর দলীয় প্রধানের নির্দেশে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সিলেটের দু’নেতা কেন্দ্রের কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তাব আকারে পেশ করেন। এরপর থেকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগে ক্ষোভ দেখা দেয়। জেলার অনেক নেতা প্রস্তাবিত কমিটির অসঙ্গতি তুলে ধরে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। অনেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে তাদের মতামত তুলে ধরেন। পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা এসব নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। কয়েকদিন আগে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়েছিলো সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। অসুস্থতাজনিত কারণে সভাপতি ঢাকায় যেতে না পারায় সাধারণ সম্পাদককে কিছু নির্দেশনা দিয়ে সিলেটে পাঠিয়ে দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার সিলেটের দুই নেতাকে ফের ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। ওই দিন বিকালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিলেটে আওয়ামী লীগের তিন নেতা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল (ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা), কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. মুশফিক চৌধুরী ও আজিজুস সামাদ ডনও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যে কমিটি জমা দিয়েছিলেন সেটি থেকে বাদ পড়েছেন একজন সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ২ জন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তিনজন ও সদস্য ৫ জন। তবে সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য মহানগরে স্থানান্তর হওয়ার কারণে বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছে ওই পদটি। বাদ পড়ার শূন্য স্থানে নতুন করে আরো কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক নেতা। তিনি জানান- প্রস্তাবিত কমিটির আরো পাঁচটি পদ পুনর্বণ্টন হতে যাচ্ছে। দলের জন্য নিবেদিতরা পাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ পদ। ইতিমধ্যে গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এসব বিষয় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ৬ই জানুয়ারি হবে সর্বশেষ বৈঠক। এই বৈঠকে প্রস্তাবিত কমিটি ফের বিশ্লেষণ করে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হবে। দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তক্রমে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কমিটি অনুমোদন দেবেন।
খবর :: মানবজমিন
ডেসিমি/ইই