বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১, ১১:৫৬ অপরাহ্ন
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: নবীগঞ্জে ভূমি খেকোদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে গ্রাম্য পঞ্চায়েতের গো-চারণ হিসেবে ব্যবহৃত প্রায় ১৪ একর ভূমি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১লা এপ্রিল) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নামজারির আবেদন খারিজ করলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন গ্রামবাসী। এ ঘটনায় উপজেলা ব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ও ভূমি অফিস সুত্রে জানাযায়, উপজেলার বুরুঙ্গা মৌজার প্রায় ১৪ একর ভুমি গ্রামবাসীরা প্রায় শত বছর ধরে গো-চারণ ভূমি হিসেবে ভোগ দখল করে আসছেন। গ্রামবাসীর ভোগ দখলীয় ওই ভূমি ১৯৫৬ ইং সনের এস.এ পর্সায় ভুলবশত শৈলেশ চন্দ্র চৌধুরীসহ ৪ জনের নামে রেকর্ড হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রায় ১০ বছর আগেই ওই শতীশ চন্দ্র চৌধুরী গংরা ভারতে চলে যান।
এরপর থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত উক্ত শৈলেশ চন্দ্র চৌধুরী বা তার কোন ওয়ারিশানের সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। উক্ত ভূমির বিষয়ে দেওয়ানী আদালতে মামলা করলে বিজ্ঞ আদালত প্রায় ১০/১২ বছর আগে শৈলেশ চন্দ্র চৌধুরী বা তার কোন ওয়ারিশান থাকলে গ্রামবাসী বা আদালতের শরনাপন্ন হওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
যা তৎকালীন সময়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকাসহ স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দীর্ঘ এক যুগ পরে চলমান জরিপে গ্রামবাসীর অগোচরে একটি ভূমিখেকো চক্র মৃত শৈলেশ চন্দ্র চৌধুরীর ভুয়া ৪ ছেলে দেখিয়ে রেকর্ড করে নেয়। গ্রামবাসী এ বিষয়ে আইনী প্রদক্ষেপ নেয়ার খবর পেয়ে নবীগঞ্জের ভুমি খেকো বলে খ্যাত অসিম বনিকসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র মিলে মৃত মাখন লাল বনিকের ছেলে সনজয় বনিকের নামে ৯২৮/২১ নং দলিলের মাধ্যমে ওই ভুয়া ৪ জন ওয়ারিশানের আমোক্তার নামা রেজিষ্ট্রি করেন। পরবর্তীতে উক্ত আমোক্তার নামা দিয়ে নামজারির আবেদন করেন সনজয় বনিক। ওই আবেদনে অসিম বনিকের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করা হয়। এতে ভুয়া ওয়ারিশান সনদ সংগ্রহ করেন ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে। এছাড়া আমোক্তারনামা দলিলে ভুয়া শৈলেশ চন্দ্র চৌধুরীর ৪ ছেলে পরিচয়দানকারীদের জন্ম নিবন্ধন নম্বার ব্যবহার করলেও উল্লেখ্য করা হয় জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার হিসেবে।
এ খবর পেয়ে পাটলী ও বুরুঙ্গা গ্রামের পঞ্চায়েত পক্ষে ৭ ই ফেব্রুয়ারি সাবেক মেম্বার বিকাশ দত্ত রায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে ভুয়া নামে নামজারি না দেয়ার আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মুমিন অধিকতর তদন্তক্রমে ওয়ারিশান সদনপত্রের বিষয়ে প্রত্যায়ন দেয়ার জন্য ইনাতগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যানের বরাবরে পত্র দেন। এর প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বজলুল রশীদ তদন্ত করে দেখতে পান শৈলেশ চন্দ্র চৌধুরীর ওয়ারিশান হিসেবে যাদের নাম দিয়েছেন তা সটিক নয় মর্মে প্রতিবেদন দেন।
গত বৃহস্পতিবার (১এপ্রিল) উক্ত নামজারি মোকদ্দমার শুনানীর ধার্য্য তারিখে সার্বিক কাগজপত্র পর্যালোচনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবেদনটি খারিজ করার আদেশ প্রদান করেন। ফলে ভুমি খেকো অসিম বনিক ও তার দলবলের পরিকল্পনা বিনষ্ট হয়ে পড়ে। এদিকে উক্ত আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাটলী ও বুরুঙ্গা গ্রামবাসী।
উল্লেখ্য, উল্লেখিত অসিম বণিকের বিরুদ্ধে এরকম আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।
ডেসিমি/ইই