ওসমানী বিমানবন্দর সড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ!
প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২২ ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ
সিলেটের সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নস্থ বড়শালা নয়াবাজার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। পূর্বনোটিস অনুসারে আজ শনিবার সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদকৃত জায়গা ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আওতায় নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, ব্যবসায়ীরা নোটিস প্রাপ্তির পর নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু বাজার থেকে সরে যেতে আরও খানিকটা সময় চেয়েছিলেন তারা, যাতের নিজেদের বকেয়া টাকা তুলতে পারেন। সেই সময় না পাওয়ায় নিজেদের হতাশার কথা জানিয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পর থেকে বড়শালা নয়াবাজার চালু হয়। বাজারে শত শত দোকান রয়েছে। বাজারের কাচাবাজারের যে অংশ, সেটি সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রতি বছর লিজ দেওয়া হয়। এর বাইরে, বাজারের বাকি অংশের মালিকানা প্রতিরক্ষা বিভাগের। ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে ইজারা নিয়ে বাজার পরিচালনা করতেন।
সম্প্রতি বাজারের ওই জায়গার নিয়ন্ত্রণভার প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে পায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এরপর এই জায়গা ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায় নিতে বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। বিষয়টি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতিকে জানানো হয়। ব্যবসায়ীরা নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিতে এবং বকেয়া টাকা তোলার সুযোগ পেতে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বাজারে তারা সমাবেশও করেন।
তবে সিভিল এভিয়েশন থেকে সময় না পেয়ে ব্যবসায়ীরা নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেন। এরপর আজ শনিবার দোকানকোঠা উচ্ছেদে অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ।
বড়শালা নয়াবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আব্দুল মজিদ মুন্না বলেন, ‘বাজারের কাচাবাজার অংশ উপজেলা প্রশাসন থেকে লিজে নেওয়া। লিজের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর অবধি। বাজারের বাকি অংশ (১৪৮৭নং দাগ) প্রতিরক্ষা বিভাগের। আমরা চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ইজারা আনি। এখন আমরা শুনেছি, প্রতিরক্ষা বিভাগ জায়গা সিভিল এভিয়েশনকে দিয়েছে। সিভিল এভিয়েশন জায়গা ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায় নিতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় তিনশ দোকান ছিল বাজারে, সব উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হলো এর মাধ্যমে। আমরা সময় চেয়েছিলাম, তা পাইনি।’
বড়শালা নয়াবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান পংখি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা বিভাগের জায়গা সিভিল এভিয়েশনকে দিয়েছে। তারা উচ্ছেদ করেছে আমাদের। আমরা ব্যবসায়ীরা এখন সর্বস্বান্ত্ব। কারো কাছ থেকে আমরা কোনো আশ্বাস পাইনি, স্বান্ত্বনা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘এই যে শত শত ব্যবসায়ী, এরা এখন কোথায় যাবে? লাখ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, সেই টাকা কিভাবে তুলবে? আমাদের জোর দাবি, নতুন একটি জায়গায় আমাদেরকে বাজারের স্থান দেওয়া হোক।’
জানতে চাইলে ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে সিভিল এভিয়েশন ওই জায়গা পেয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি রক্ষায় বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এই জায়গা এখন ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায়।’
ওই জায়গায় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।