উসকানিমূলক পোস্ট: সেই ঝুমন দাস ফের পুলিশ হেফাজতে
প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২২ ৮:১৮ অপরাহ্ণ
ডেস্ক রির্পোট : নিজের ফেসবুক ওয়ালে উসকানিমূলক পোস্ট দেয়ার অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লার সেই ঝুমন দাসকে আবারও ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে- ঝুমন দাসকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঝুমন ফেসবুকে একটি উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করেছিলেন। সে কারণে নোয়াগাঁও গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় নিয়ে এসেছি। আমরা তাকে আটক করিনি, শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
এদিকে ঝুমনের ভাই নুপুর দাস বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১টায় সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়ার অভিযোগে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এর আগে দুই দিন ধরে পুলিশ তাকে ফলো করছিল বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘তার ( ঝুমন দাস) মোবাইল পুলিশ নিয়ে গেছে এবং কিছু পোস্ট রিমুভ দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ‘শানে রিসালাত সম্মেলন’ নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।
ঝুমন দাসের সেই ফেসবুক পোস্টে মামুনুল হকের সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তার অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পরদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম।
শাল্লায় হামলার ঘটনায় শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম, স্থানীয় হাবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ও ঝুমন দাসের মা নিভা রানী তিনটি মামলা করেন। তিন মামলায় প্রায় ৩ হাজার আসামি। পুলিশ নানা সময়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই এখন জামিনে।
শুধু জামিন পাচ্ছিলেন না ঝুমন দাস। বিচারিক আদালতে পাঁচ দফা তার জামিন আবেদন নাকচ করেন বিচারক। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছিল।
এর মধ্যে জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন ঝুমন দাস। কারাবন্দির ছয় মাস পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।