শ্রীপুরে বন্ধ কোয়ারীতে পাথর চুরি,জনসাধারনের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি
প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর ২০২২ ৭:১৭ অপরাহ্ণ

মো. এম,এম রুহেল, জৈন্তাপুর প্রতিনিধি : প্রায় ৩০ হাজার পাথর শ্রমিকের রুটি রোজগারের মাধ্যম শ্রীপুর পাথর কোয়ারী। সেই কোয়ারী পাথর শূন্য হওয়ায় সরকারের নির্দেশনায় প্রায় ৫বৎসর হতে বন্ধ রাখা হয়েছে। সম্প্রতি একটি পাথর খেকু চক্র রাত ও দিন সমান তালে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সীমান্ত রক্ষীবাহিনী এবং প্রশাসন ও রাজনৈতিক কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজেসে বন্ধ রাখা কোয়ারী হতে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষে পাথর উত্তোলন করছে। সাধারণ শ্রমিকদের দাবী ৩০ হাজার স্থানীয় পাথর শ্রমিকদের রুটি রোজগারের কর্মক্ষেত্র শ্রীপুর পাথর কোয়ারীর পাথর চুরির চাইতে খুলে দেওয়া হউক সরকার রাজস্ব আদায় করুক, নতুবা বন্ধ কোয়ারী চুরি করে পাথর উত্তোলন সটিক ভাবে বন্ধ রাখা হউক।
সরজমিনে শ্রীপুর পাথর কোয়ারীতে শ্রমিক সেজে ঘুরে দেখাযায়, গত ১০/১৫দিন হতে একটি পাথর খেকু চক্র শ্রীপুর পাথর কোয়ারীর জিরোলাইন ১২৮০ নং মেইন পিলার অতিক্রম করে অন্তত ৩০ হতে ৫০গজ অভ্যান্তরে প্রবেশ করে ভারতের ভূখন্ড হতে বাংলাদেশ অংশ হতে পাথর আহরণ করছে। কাজের সুবাধে শ্রমিকদের সাথে আলাপকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা জানান আমরা পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রীপুর পাথর কোয়ারীর জিরো লাইন অতিক্রম করে পাথর আহরণ করে নির্দিষ্ট স্থানে জমা করে রাখি। সেই পাথর গুলো শ্রমিকদের অন্য একটি গ্রæপ সন্ধ্যার পর পর নৌকা যোগে আসামপাড়া ও চার নম্বর বাংলাবাজার এলাকায় নিয়ে যাবে। কিছু পাথর অন্য একটি চক্র শ্রীপুর চা-বাগান এলাকা দিয়ে পাথর নিয়ে যায়। এভাবে কয়েকটি চক্রের মাধ্যমে জীবন বাজী রেখে বিএসএফ তাড়া খেয়ে আমরা পাথর উত্তোলন ও সংগ্রহ করি। তাতেও আমরা সটিক মজুরী মিলছে না।
শ্রমিকরা আরও জানান, পাথর ব্যবসায়ীরা সীমান্ত প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাদের লিয়াজো করে আমাদের পাথর কোয়ারীতে প্রেরণ করেন। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী আমাদের তাড়া করে। চুরি করার চাইতে যদি শ্রীপুর পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়া হয় তাহলে ৩০ হাজার শ্রমিকরা কোয়ারী স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবে। তাতে সরকার প্রচুর পরিমান রাজস্ব আদায় করতে পারবে।
এবিষয়ে শ্রীপুর এলাকার বাসিন্ধা ইমন আহমদ, রাজিব আহমদ, গিয়াছ উদ্দিন, ইসমাইল আলী, মালিক লাল দাশ, হোসেন আহমদ, কুতুব আলী বলেন, একসময় এই শ্রীপুর পাথর কোয়ারীতে বৈধ পন্থায় আমরা পাথর উত্তোলন করেছি। বিনিময়ে সরকার প্রচুর রাজস্ব আদায় করেছে। সম্প্রতি কোয়ারী বন্ধ থাকার পরও একশ্রেনীর পাথর খেকু চক্র নৌকা প্রতি বড় পাথর ১৬শত টাকা এবং ছোট পাথর ১২শত টাকা অনুরুপ ভাবে ট্রাক প্রতি ২হাজার ৫০০টাকা হতে সর্বনি¤œ ১হাজার টাকা আদায় করছে। যেখানে শ্রমিককে মৃত্যুর মুখে টেলে দিয়ে পাথর আহরণ করা হচ্ছে। আমাদের দাবী প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত করা আগে সরকার বৈধ পক্রিয়ায় শ্রীপুর পাথর কোয়ারী হতে পাথর আহরনের সুযোগ করে দেওয়ার নতুবা বন্ধ কোয়রী সঠিক ভাবে বন্ধ রাখার দাবী জানান। অন্যতায় যে ভাবে পাথর চুরি করা হচ্ছে তাতে যে কোন মুহুত্বে সাধারণ শ্রমিকরা আইন ভঙ্গ করে শ্রীপুর পাথর কোয়ারীতে নেমে পড়বে। ফলে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি দেখা দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, জৈন্তাপুরে জেলা প্রশাসকের সাথে সুধিজনের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সকলে জানেন আমি বিষয়টি উত্থাপন করি। কিন্তু জেলা প্রশাসক মহোদয় কড়া ভাষায় বলেন সরকার ঘোষনা অনুযায়ী যে সকল কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানে কোন কাজ করতে যাওয়াটি চরম অন্যায়। তা কখনও করতে দেওয়া হবে না। দূর্গাপুজায় পরিদর্শন কালে আমি শ্রীপুর কোয়ারীতে রাতে গিয়ে দেখলাম শত শত শ্রমিক পাথর নিয়ে আসছে। জেলা প্রশাসকের কড়া নির্দেশনার পরও রহস্য জনক কারনে সশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং কোয়ারী হতে চুরি করে শ্রমিককের জীবন বাজী রেখে প্রতিদিন শত শত গাড়ী পাথর উত্তোলন হচ্ছে। তাই চুরি করার চাইতে শ্রমিকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ৩০হাজার শ্রমিকের কর্মস্থল শ্রীপুর পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার দাবী জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আপনি ঘটনাটি জানালেন আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করছি।